সম্মানিত সদস্যবৃন্দ,
আসসালামু আলাইকুম।

সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, নাবিক ও প্রবাসী শ্রমিক কল্যাণ পরিদপ্তর কর্তৃক আয়োজিত “মেরিটাইম এ্যাডভাইজরী কমিটি” এবং “নাবিক কল্যাণ বোর্ড” এর ২য় সভা গত ২০শে আগস্ট ২০২৩ইং তারিখে সরকারি কার্যভবন-১, আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম-এ অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত সভায় বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স এসোসিয়েশন (BMMOA)-এর কার্যকরী পরিষদের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন শেখ মোঃ শরীফ উদ্দিন, অতিরিক্ত সচিব (সংস্থা-১), নৌপরিবহন মন্ত্রনালয়।

“মেরিটাইম এ্যাডভাইজরী কমিটি”-এর সভায় আলোচনার বিষয়বস্তু;

“মেরিটাইম এ্যাডভাইজরী কমিটি”র সভায় আলোচ্য বিষয়ের উপর দীর্ঘ আলোচনার প্রেক্ষিত BMMOA সভাপতি মেরিনারদের জন্য এবং জাহাজ মালিকদের স্বার্থে Collective Bargaining Agreement (CBA)-এর গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন। এছাড়াও বাংলাদেশী পতাকাবাহী জাহাজের জন্য ২০১৬ সালে নৌপরিবহন অধিদপ্তর কর্তৃক CBA বাধ্যতামূলক করে ইস্যুকৃত পত্রের কথা উল্লেখপূর্বক এখনও পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে কেন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি সেই বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং এই বিষয়ে অতিসত্বর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান।

সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী CBA বাধ্যতামূলক করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষের নিকট দ্রুত পত্র প্রেরণের তাগিদ দেয়া হয়।

“নাবিক কল্যাণ বোর্ড”-এর সভায় আলোচনার বিষয়বস্তু;

২। “লেভী তহবিল” থেকে অফিসার/ অফিসারবৃন্দের সন্তান/ ক্যাডেটগণ যাতে সহযোগিতা পায় সেই বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এই বিষয়ে BMMOA সভাপতি আন্তর্জাতিক আইনে সংজ্ঞায়িত “নাবিক” শব্দের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা প্রদান করেন এবং এই ক্ষেত্রে লেভী তহবিল থেকে অফিসার/ অফিসারবৃন্দের সন্তান/ ক্যাডেটগণ প্রয়োজনবোধে নিয়মমাফিক সহোযোগিতা পেতে কোন বাধা নেই বলে মন্তব্য করেন। সভায় উপস্থিত সকলে এই বিষয়ে সম্মতি প্রকাশ করেন। লেভী তহবিল পরিচালনার জন্য কিমিটি করার জন্য প্রস্তাব দেয়া হয়।

৩। বাংলাদেশী নাবিকদের সিওপি (COP) প্রদানে দীর্ঘসূত্রতার কারনে মেরিনাররা নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। উক্ত বিষয়ের আলোচনায় এসোসিয়েশনের প্রতিনিধিগণ COP প্রদানের ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রতার মূল কারণগুলো যেমন- এসেসমেন্টে কালক্ষেপন, কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে সার্টিফিকেট প্রেরণে দীর্ঘ সময় ব্যয়, হেল্প লাইনে কল দিয়ে যথাযথ সাহায্য না পাওয়া, অনলাইন আপ্লিকেশন সিস্টেম মাঝে মাঝেই ভেংগে পড়া ইত্যাদি তুলে ধরেন এবং অতিশীঘ্র এই সমস্যা সমাধানের দাবি জানান। উল্লেখিত বিষয়গুলোর কারনে অনলাইন সিওপি জনবান্ধব/ জনপ্রিয় হওয়ার পরিবর্তে নাবিকদের মধ্যে হতাশা বাড়িয়েই যাচ্ছে।
প্রয়োজনবোধে চট্টগ্রামেও COP প্রদানের ব্যবস্থা করার প্রস্তাব দেয়া হয়।

৪। চট্টগ্রাম বন্দরে অবস্থানরত বিভিন্ন সমুদ্রগামী জাহাজে কর্মরত বাংলাদেশী মেরিনারদের গেটপাস জটিলতা নিরসনে অত্র এসোসিয়েশন বিভিন্ন সময়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত পত্র প্রেরণ করে দেখা করলেও তার যথাযথ ব্যবস্থা না করার বিষয় তুলে ধরা হয়। এরই প্রেক্ষিতে মেরিনারদের চলাচলের সুবিধার্থে বন্দরের সকল গেটসমূহে ২৪ ঘন্টা প্রবেশ এবং বাহির হওয়ার অনুমতি দেয়া এবং যথাযথ পরিচয়ত্রের মাধ্যমে জাহাজের মাস্টারের অনুমতি সাপেক্ষে মেরিনারদের পরিবারের সদস্যদের আগমনের ক্ষেত্রে গেটপাস প্রদানের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে ( বর্তমানে মাত্র একটি গেট দিয়ে শোর লীভের ব্যবস্থা আছে)।

একইসাথে উক্ত কমিটির পরবর্তী সভায় চট্টগ্রাম বন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

এছাড়াও বিবিধ আলোচনায় ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউট-এ নাবিক ভর্তিকরণের ক্ষেত্রে নাবিকদের সন্তানদের ২০% কোটা পুনর্বহাল করা, রোস্টার পরিবর্তন, ভারতীয় ভিসাসহ অন্যান্য দেশের ভিসা প্রাপ্তি সহজীকরণে রাস্ট্রদূতদের সাথে বৈঠক, শীপ ম্যানিং এজেন্ট এসোসিয়েশনের জামানত হিসেব প্রদেয় অর্থের পরিমাণ হ্রাসকরণ, নাবিক কলাণ আইন প্রণয়ন, নাবিক কন্টিবিউটরি ভবিষ্যৎ তহবিল বিধিমালা চালুকরণ, নাবিক কল্যাণ তহবিল স্থানান্তর, নাবিকদের চাকুরির সুযোগ বৃদ্ধির জন্য মতামত আহবান, রিক্রটিং এজেন্টদের জমাকৃত টাকার স্থায়ী আমানতের লভ্যাংশ নাবিকদের কল্যাণে ব্যায়ের প্রস্তাব ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।

উল্লেখ থাকে যে, নাবিক ও প্রবাসী শ্রমিক কল্যাণ পরিদপ্তর কর্তৃক আয়োজিত “মেরিটাইম এ্যাডভাইজরী কমিটি” এবং “নাবিক কল্যাণ বোর্ড” এর ১ম সভা গত ২১/০৩/২০২২ইং তারিখে অনুষ্ঠিত হয়েছিল যেখানে এসোসিয়েশনের কার্যকরী পরিষদের সদস্যবৃন্দ বাংলাদেশের মেরিন সেক্টরে বিরাজমান বিভিন্ন সমস্যাসমূহ ও এর সমাধানকল্পে BMMOA-এর প্রস্তাবনাসমূহ উপস্থাপন করেছিলেন, যার কিছু অগ্রগতির ফলো আপ করা হয়।