কোভিড১৯ টিকা সনদ ছাড়া বাংলাদেশে কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না। বাংলাদেশ সরকারের সাম্প্রতিক নিয়ম বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নাবিকদের জন্যে এক বিরাট চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, অনেক বাংলাদেশি নাবিকই জাহাজে অবস্থান করার কারণে এখনও টিকা গ্রহণ করতে পারেননি।

জাহাজে নাবিকদের অবস্থান কাল ক্ষেত্রবিশেষে চার থেকে নয় মাস হতে পারে, এর মধ্যে বিভিন্ন দেশের বন্দরে কোভিড ভাইরাস প্রতিরোধে কড়াকড়ি আরোপ করার কারনে অনেকেই সময়মত জাহাজ থেকে ফিরতে পারেননি।

বাংলাদেশে নাবিকদের কোভিড ভ্যাক্সিন দেওয়ার কাজটি তুলনামূলক দেরিতে শুরু হয়েছিল। ফলে যারা ভ্যাক্সিন নিয়ে সমুদ্রযাত্রায় যেতে পারেননি তাদের অনেকেরই জাহাজ থেকে সাইন অফ করে দেশে আসার সময় হয়েছে এখন। কিন্তু বর্তমান নিয়মের কারণে তারা দেশে আসতে পারছেন না। যার ফলে তাদের কন্ট্রাক্টের চেয়েও অতিরিক্ত দিন জাহাজে অবস্থান করার আশংকা তৈরি হয়েছে যা তাদের শারিরিক মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য বিরূপ প্রভাব ফেলবে। তাছাড়াওসাইন অফকরতে সমস্যা সৃষ্টি হলে আন্তর্জাতিক শিপিং কোম্পানিগুলো বাংলাদেশি নাবিকদের চাকরি দেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ হারাবে। প্রসঙ্গে দেশের অন্যতম বিখ্যাত মেরিন ম্যানিং এসেন্সি হক অ্যান্ড সন্স এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ক্যাপ্টেন গোলাম মহিউদ্দিন কাদরির সঙ্গে কথা বলছিলাম। তিনি বললেন, “অনেক সিফেয়ারার যারা বর্তমানে জাহাজে আছেন, যাদের ভ্যাক্সিন দেওয়া নেই তারা কীভাবে বাড়ি ফিরবে? ব্যাপারে জরুরী ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। সীফেয়ারা্রের জন্যে সম্প্রতি দেওয়া ভ্যাক্সিন ছাড়া বাংলাদেশে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত রাখা জরুরী।

উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশি নাবিকেরা বছরে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার উপার্জন করে থাকেন। বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স এসোসিয়েশন এর সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী বাংলাদেশি নাবিকদের সম্প্রতি জারি করা নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত রাখার জোর দাবি জানিয়েছেন। তার মতে, “ নিষেধাজ্ঞার কারণে বাংলাদেশি নাবিকদের মধ্যে বিশেষ করে বর্তমানে যারা জাহাজে কর্মরত আছেন তাদের মাঝে চরম হতাশা বিরাজ করছে, সরকারকে বাংলাদেশি নাবিকদের নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত রাখার জন্য দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার আহ্বান জানাচ্ছি, এছাড়াও নাবিকদের খুব দ্রুত বূস্টার ডোজের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

উল্লেখ্য পণ্য পরিবহনের মত গুরুত্বপূর্ণ কাজে নিয়োজিত থাকার কারণে সারাবিশ্ব সহ বাংলাদেশে সরকারও নাবিকদের কিওয়ারকার ( Key Worker) ঘোষণা করেছে।

বাংলাদেশি নাবিকদের সাইন অফ সহজীকরণে নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত না রাখলে নাবিক পরিবর্তন জটিল হয়ে পড়বে যা বাংলাদেশি নাবিকদের আন্তর্জাতিক চাকুরির বাজারে বিরূপ প্রভাব ফেলবে এবং দেশ হারাবে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা। সেজন্যে প্রয়োজনবোধে জাহাজে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাবিকদের নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত রাখা যেতে পারে এবং এর পাশাপাশি চাকরির বাজার ধরে রাখার জন্য খুব দ্রুত নাবিকদের বুস্টার ডোজের ব্যবস্থা করতে হবে।

সূত্র: http://bdnews24.com